নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলার রসালো লিচু পাকতে শুরু করেছে। প্রতিবছরই এপ্রিল মে মাসে লিচু পাকতে শুরু করে বাগানগুলোতে। এবার মে মাসে পুরোদমে বাজারে আসবে সোনারগাঁয়ের লিচু। এবার খড়া ও ঝড় তুফান তেমন না থাকায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন লিচু ব্যবসায়ীরা। তবে এবার রোজা ও করোনা ভাইরাসের কারণে লিচু বাজারে একটু প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারনা করছেন লিচু বাগান মালিক ও লিচু ব্যবসায়ীরা।
সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখে যায়, এখন প্রতিটি বাগানের লিচু গাছে থোকায় থোকায় কাঁচাপাকা লিচু ঝুলছে। ঝাকড়া গাছের ডালে ডালে ঝুরন্ত লাল টকটকে রঙের ছোট ফলের গুচ্ছ লিচুর দৃশ্য খুবই মনোরম। ব্যবসায়ীরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। বাদুর ও কাকের হাত থেকে বাঁচতে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা গাছের চুড়ায় ইলেক্সটিক বাতি, পলিথিন কাগজ, বাস ও টিনের তৈরী বিভিন্ন ধরনের বাজনা (ঠাডা) লাগিয়ে বাগানের ভেতর ঘর বানিয়ে রাতভর পাহারা বসিয়েছেন। হে হই শব্দে দিন রাত মুখর হয়ে উঠে বাগানের আশপাশের এলাকা।
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, উপজেলার সোনারগাঁও পৌরসভার, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউপির বিভিন্ন স্থানে লিচু বাগান রয়েছে। তবে পৌরসভার সরদার বাড়ী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, দুলালপুর, বাড়ী মজলিশ, দীঘিরপাড়, পানাম, অর্জুন্দি, বাগমুছা, দত্তপাড়া, ইছাপাড়া, চিলারবাগ, কৃষ্ণপুরা, হাঁড়িয়া, পানাম গাবতলী, ষোলপাড়া ও ভট্টপুর এলাকায় উৎকৃষ্টমানের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। সোনারগাঁয়ের লিচু রঙে ও স্বাদে অতুলনীয়।
লিচু চাষিরা জানিয়েছেন, সোনারগাঁয়ের লিচু বর্তমানে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩ ও এলাচি, পাতি এ পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য লিচু থেকে বর্তমানে কদমী লিচু চাষের প্রতি মনোযোগী হয়ে পড়েছেন চাষিরা। প্রতি বছর এক একটি বাগান চার-পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। তাই চাষিরা কোথাও একটু খালি জায়গা পেলেই সেখানেই কদমী লিচুর বাগান তৈরি করছেন। আগে প্রতি বাড়ীর আশপাশের সৈখিনতার বসে লিচু গাছ লাগালেও বর্তমানে বানিজ্যিক ভাবে বিক্রির জন্য বিভিন্ন নিচু জমি ভরাট করে লিচু বাগান তৈরী করা হচ্ছে।
সোনারগাঁয়ে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় তিন শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এ বাগানে বেশির ভাগই কদমী লিচু চাষ হচ্ছে। বাগানের মালিকরা আশা করছেন এ বছর কদমী লিচু বিক্রি হবে প্রতি শ’ সাড়ে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। পাতি লিচু বিক্রি হবে প্রতি শ’ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে স্বাদে ও রসে পাতির লিচুর কদর রয়েছে।
লিচু ব্যবসায়ী মাসুম বলেন, আমরা লিচুর ফলন না দেখেই বাগান মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করে থাকি। লিচু ব্যবসায়ীরা ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে লিচু ব্যবসা করে।
স্থানীয়রা জানান, অন্যান্য এলাকার লিচুর চেয়ে সোনারগাঁয়ের লিচু আকারে একটু বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় এ লিচুর চাহিদা বেশি রয়েছে আর সোনারগাঁয়ের লিচু সবার আগে বাজারে আসে তাই এ লিচুর চাহিদা একটু বেশি। তুলনামূলকভাবে লিচু বেশ দাম থাকে